সর্বশেষ

6/recent/ticker-posts

Ad Code

‘আমি এখন যে কাজগুলো করছি, এগুলো আসলেই প্রেসিডেন্টের কাজ নয়’



 জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) মনোনীত পরিচালক হিসেবে বিসিবির সভাপতি হয়েছিলেন আমিনুল ইসলাম। আগামী মাসে বিসিবির নির্বাচন দিয়ে তিনি সরে যাবেন, এমনই ধারণা ছিল সবার। কিন্তু এখন আমিনুল নিজেই নির্বাচনে প্রার্থী হতে আগ্রহী, পাচ্ছেন সরকারের সমর্থনও। গতকাল দুপুরে বিসিবি কার্যালয়ে বসে প্রথম আলোকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক বলেছেন নির্বাচন নিয়ে তাঁর ভাবনা ও গত তিন মাসে বিসিবি সভাপতি হিসেবে নিজের অভিজ্ঞতার কথা

দৈনিক আপডেট

একসময় বাংলাদেশ দলে খেলছেন, জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব করেছেন। তিন মাস হলো বিসিবির সভাপতির দায়িত্বও পালন করছেন। এখন পর্যন্ত অভিজ্ঞতাটা কেমন?

আমিনুল ইসলাম: একসময় খেলতাম, খেলা দেখতাম। তবে ক্রিকেট বোর্ডের যে বৃত্তটা ছিল, সব সময় সে বৃত্তের বাইরে ছিলাম। দেশের ক্রিকেটকে বাইরে থেকে দেখা, সমালোচনা করা, পরামর্শ দেওয়া—এসবই ছিল তখন আমার মূল কাজ। পরবর্তী সময়ে যখন আমি বৃত্তের ভেতরে ঢুকে গেলাম, মনে হলো সবই আমার বা আমাদের। সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পর আমি একটা চার্টার তৈরি করেছি। সেই চার্টারের মধ্যে থেকেই কাজ করছি। কোনো কারণে যদি আমি এর বাইরে চলে যাই, আমি ট্র্যাকের বাইরে চলে যাব। আমার মনে হয়েছে, কিছু জিনিস বাংলাদেশ ক্রিকেটে মিসিং ছিল অথবা হয়তো ছিল, কিন্তু কোনো কারণে ধারাবাহিকতা রক্ষা হয়নি। বোর্ডে এসে আমি সে কাজগুলো করতে পারছি।

আরও পড়ুন
দৈনিক আপডেট

দায়িত্ব নেওয়ার পর যে ক্রিকেট বোর্ডটা পেলেন, কতটা গোছানো ছিল তা?

আমিনুল: একটা কমিটি বহু বছর ধরে বিসিবির দায়িত্বে ছিল। গত বছরের ৫ আগস্টের পর আবার একটা নতুন কমিটি এল। দায়িত্ব নেওয়ার পর মনে হয়েছে, ক্রিকেট বোর্ডে তিন-চারটি জায়গায় ব্যাপক শূন্যতা। এক নম্বর হচ্ছে, একটা প্রতিষ্ঠানের যে কাঠামো বা অর্গানোগ্রাম থাকে, সেটা ম্যাসিভলি মিসিং। দেশের ক্রিকেটটাকে যেভাবে ছড়িয়ে দেওয়া উচিত ছিল বা যেভাবে ক্রিকেটটাকে তুলে আনা উচিত ছিল, ক্রিকেটের সংস্কৃতিটা বিস্তৃত করার দরকার ছিল, সেটা হয়নি বা হারিয়ে যাচ্ছিল। ক্রিকেটারদের বোঝা, তাদের সঙ্গে কথা বলা, আত্মবিশ্বাস দেওয়া—মনে হচ্ছিল সবকিছুকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে। আমি আশ্চর্য হয়েছিলাম, যখন শ্রীলঙ্কা সফরে শান্ত (নাজমুল হোসেন) ক্যাপ্টেনসি ছেড়ে দিল। এরপর বাংলাদেশ দ্বিতীয় টেস্টে হেরে গেল। আমি বুঝতে পারছিলাম না যে এসবের দায় কেন আমার ওপরও আসে। আমার কাজ তো বোর্ডের সব কটি বিভাগ দেখা, সামগ্রিক পলিসিটা মেইনটেইন করা। কিন্তু যখন দল হেরে যায়, তখন কেন আমার ওপরে দায় আসে, আর যখন জিতে যায় কেনই–বা সেই সাফল্যের কৃতিত্ব একা সভাপতিকে দিতে হবে! এই কালচারটা দেখে আমি শকড হয়েছিলাম। তারপরও মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। মনে হয়েছে যে এগুলো হয়তো আমাদের ক্রিকেট–সংস্কৃতিরই একটা অংশ।

ক্রিকেটের সংস্কৃতিটা আরও ছড়িয়ে দিতে চান আমিনুল। সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন
ক্রিকেটের সংস্কৃতিটা আরও ছড়িয়ে দিতে চান আমিনুল। সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন
প্রথম আলো
দৈনিক আপডেট

শুরুতে আপনি বলছিলেন সাময়িক সময়ের জন্য আপনি দায়িত্ব নিয়েছেন, কিন্তু এখন আপনি বিসিবির নির্বাচনে অংশ নেওয়ার চিন্তা করছেন। সিদ্ধান্তটা বদলালেন কেন?

আমিনুল: (হাসি) মনে আছে, আমি প্রথম দিনেই বলেছিলাম যে একটা ‘কুইক টি-টোয়েন্টি ইনিংস’ খেলতে এসেছি। আমি যেখানে চাকরি করতাম, আইসিসি, তারাও ভাবত বা আমার পরিবারও ভাবত যে আমি এখানে এসেছি অল্প সময়ের জন্য, নির্বাচনটা যেন ভালোমতো হয়। কিন্তু নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিতে গিয়ে দেখলাম, নির্বাচনের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশের ক্রিকেট। আমি ন্যাশনাল স্পোর্টস কাউন্সিলের (এনএসসি) কাউন্সিলর হিসেবে বোর্ডে এসেছি। সেখান থেকেও আমাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং আমার নিজের কাছেও মনে হয়েছে, আমি যে কাজগুলো করছি, সে কাজগুলো চালিয়ে যাওয়ার জন্য হয়তো আমার আরও কিছুদিন এখানে থাকা উচিত। কিন্তু সিদ্ধান্তটা নেওয়া সহজ ছিল না। কারণ, কয়েক মাস কাজ করার চেয়ে লম্বা সময় কাজ করার মধ্যে বড় একটা চ্যালেঞ্জ থাকে। পারিবারিক চ্যালেঞ্জ থাকতে পারে, অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ থাকতে পারে। তারপরও দেশের ক্রিকেটের প্রয়োজনে আমি যেন কাজটা আরেকটু এগিয়ে রেখে যেতে পারি, সে লক্ষ্যেই আমি আমার সিদ্ধান্তটা বদল করেছি। আমি আরও সময় বাংলাদেশের ক্রিকেটকে দিতে চাই।

Post a Comment

0 Comments